উদ্ভিদের যে কোন বিভাজনক্ষম কোষ থেকে সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত অবস্থায় উপযুক্ত পুষ্টি মাধ্যমে বর্ধিতকরণ করাকে টিস্যু কালচার বলে।
গবেষণাগারে কোন টিস্যু পুষ্টি মাধ্যমে কালচার করাই হলো টিস্যু কালচার।
একটি উদ্ভিদের ক্ষুদ্র কোষ থেকে পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদ পরিণত হওয়ার ক্ষমতাকে টটিপোটেন্সি বলে।
ক্ষুদ্র অংশ ব্যবহারের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদ তৈরি করা হয় এজন্য একে মাইক্রোপ্রোপাগেশন বলে। আবার এ প্রক্রিয়ায় কোন উদ্ভিদের সম গুন সম্পন্ন প্রজন্ম বা ক্লোন তৈরি করা হয় ফলে একে ক্লোনিং প্রযুক্তি ও বলা হয়।
জার্মান উদ্ভিদবিজ্ঞানী Gottlieb Haberlandt কে টিস্যু কালচার এর জনক বলা হয়।
টিস্যুকালচারের গবেষণাগার : একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ টিস্যুকালচারের তিনটি কক্ষ থাকবে।
১.সাধারণ কক্ষ
২.ইনোকুলেশন চেম্বার
৩.কালচার চেম্বার
★ টিস্যু কালচার এর প্রকারভেদ :
কক্ষমুকুল কালচার, মেরিস্টেম কালচার, মাইক্রোপ্রোপাগেশন,মেরিস্টোম কালচার, ক্যালাস কালচার,পরাগধানী কালচার, প্রোটোপ্লাস্ট কালচার।
★ টিস্যু কালচারের ধাপসমূহ :
১. মাতৃউদ্ভিদ বা এক্সপ্লান্ট নির্বাচন :
টিস্যুকালচারের উদ্দেশ্যে উদ্ভিদের যে অংশ আলাদা করে নেওয়া হয় তাকে এক্সপ্লান্ট বলা হয়। সাধারণত কান্ডের শীর্ষ, শীর্ষ মুকুল ,কক্ষ মুকুল, কচি পাতা, কান্ড এক্সপ্লান্ট হিসেবে ব্যাবহার করা হয়।
২. কালচার মিডিয়াম বা আবাদ মাধ্যমে তৈরি :
উদ্ভিদের পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য যে রাসায়নিক উপাদান প্রয়োজন হয় তার সমন্বয়ে আবাদ মাধ্যমে তৈরি করা হয়। বিভিন্ন ধরনের মুখ্য ও গৌণ পুষ্টি উপাদান, ভিটামিন, সুক্রোজ, ফাইটোহরমোন থাকে। মৌলিক উপাদান সমৃদ্ধ আমাদ মাধ্যমকে ব্যাসাল মিডিয়াম বলে। মিডিয়ামের pH 5.5 থেকে 5.8 এর মধ্যে রাখা হয়।
৩. এক্সপ্লান্ট জীবাণুমুক্তকরণ বা নির্বীজকরণ :
মিডিয়ামকে অটোক্লেভ যন্ত্রে ১২১ তাপ ১৫ পাউন্ড চাপে ২০ মিনিট রাখা হয়। যার ফলে এক্সপ্লান্ট জীবানুমুক্ত হয়।
৪. মিডিয়ামে টিস্যু স্থাপন:
মিডিয়ামে এক্সপ্লান্ট জীবাণুমুক্ত করে কাচ পাত্রে রাখা মিডিয়ামে স্থাপন করতে হয়।
৫. ক্যালাস সৃষ্টি ও সংখ্যা বৃদ্ধি :
মিডিয়ামে টিস্যু স্থাপনের পর পাত্রটিকে একটি বৈদ্যুতিক আলো, তাপমাত্রা (১৭-২০ C) ও আপেক্ষিক আর্দ্রতা(70-75%) নিয়ন্ত্রিত কক্ষে রাখা হয়।
ফলে টিস্যুতে বারবার বিভাজিত হয়ে একটি কোষীয় মন্ডে পরিণত হয়। মন্ড হলো আয়বহীন টিস্যু গুচ্ছ এভাবে ক্যালাস থেকে অসংখ্য মুকুল সৃষ্টি হয়।
৬. মূল উৎপাদক মাধ্যমে স্থানান্তর ও চারা উৎপাদন :
মুকুলকে সাবধানে কেটে নিয়ে মূল উৎপাদনকারী মিডিয়ামে রাখা হয় এবং সেখানে প্রতিটি মুকুল,মুল সৃষ্টি করে পূর্ণাঙ্গ চারা গাছে পরিণত হয়।
৭. টবে স্থানান্তর :
উপযুক্ত মুল সৃষ্টি হলে পূর্ণাঙ্গ চারাগাছ কালচার করা পাত্র থেকে সরিয়ে নিয়ে টবে স্থানান্তর করা হয়।
৮. প্রাকৃতিক পরিবেশ তথা মাঠ পর্যায়ে স্থানান্তর :
টবে চারা গাছ গুলো সতেজ হয়ে ওঠে উঠলে সেগুলিকে একপর্যায়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে মাটিতে রোপন করা হয়।
0
0
0