আলোর ব্যাতিচার । Interference of light

Cyral Carbon
0



স্থির পানিতে দুই হাতের সাহায্যে অল্প দূরত্বে দুটি স্থানে একই তালে আঘাত করলে থাকলে কোন কোন রেখা বরাবর তরঙ্গের সর্বোচ্চ বিস্তার আবার কোন কোন রেখা বরাবর তরঙ্গের সর্বনিম্ন স্তর দেখা যায় ঘটনাটি এভাবে দেওয়া যায়।

যে দুটি স্থানে আঘাত করা হচ্ছে সেখান থেকে সমদশা সম্পন্ন তরঙ্গ উৎপন্ন হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এবং একে অপরের উপরে পতিত হচ্ছে অর্থাৎ তরঙ্গের উপরিপাতন হচ্ছে। উৎসদ্বয় হতে সর্বদা সমদশা সম্পন্ন তরঙ্গ নির্গত হলেও বিভিন্ন বিন্দুতে উৎসদ্বয় হতে পথ পার্থক্যের কারণে দশা পার্থক্য সৃষ্টি হয়। এজন্য কোথাও তরঙ্গ দ্বয় সমদশায় মিলিত হবে ফলে তরঙ্গের বিস্তার সর্বোচ্চ হবে আবার কোথাও বিপরীত দশায় মিলিত হবে ফলে তরঙ্গের বিস্তার সর্বনিম্ন হবে একে তরঙ্গের ব্যতিচার বলে।আলোর ক্ষেত্রেও এরূপ ব্যতিচার ঘটে।

1802 সালে বিজ্ঞানী টমাস ইয়ং পরীক্ষার সাহায্যে আলোর ব্যতিচার প্রদর্শনের সফলকাম হয়। আলোর ব্যতিচার তরঙ্গ তত্ত্বের বৈধতা প্রমাণ করে অল্প দূরে অবস্থিত দুটি ক্ষুদ্র আলোক উৎস থেকে নির্গত সমান কম্পাঙ্ক ও বিস্তারের আলোক তরঙ্গের উপরিপাতন এর ফলে কোথাও উজ্জ্বল আবার কোথাও অন্ধকার অবস্থা সৃষ্টি হয় একে আলোর ব্যতিচার বলে।

সুতরাং,
পাশাপাশি অবস্থিত দুটি উৎস থেকে নির্গত সমান কম্পাঙ্ক ও বিস্তারের দুটি আলোক তরঙ্গের উপরিপাতন এর ফলে পর্যায়ক্রমে উজ্জ্বল ও অন্ধকার অবস্থার সৃষ্টি হওয়াকে আলোর ব্যতিচার বলে।

আলোর স্থায়ী ব্যতিচার সৃষ্টির জন্য উৎসদ্বয়কে অবশ্যই সুসংগত হতে হবে।


সুসংগত উৎস

দুটি আলোক উৎস থেকে নির্গত আলোক তরঙ্গের কম্পাঙ্ক ও তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সমান, বিস্তার সমান বা প্রায় সমান এবং দশা সর্বদা পরস্পরের সাথে একই হলে বা নির্দিষ্ট দশা পার্থক্য বজায় থাকলে এরূপ দুটি ক্ষুদ্র ও খুব কাছাকাছি স্থাপিত উৎসকে সুসংগত উৎস বলে।


বাস্তবে দুটি আলাদা উৎস কখনোই সুসংহত হতে পারে না কারণ দুটি উৎসের কম্পাঙ্ক ও তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ভিন্ন হলেও, একই দশা সম্পন্ন বা নির্দিষ্ট দশা পার্থক্য বজায় রেখে তরঙ্গ নির্গত করতে পারে না। তাই ব্যবহারিক ক্ষেত্রে আলোর ব্যতিচার সৃষ্টির জন্য একবর্ণী উৎস থেকে থেকে আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরণ বা অপবর্তন এর সাহায্যে দুটি উৎস সৃষ্টি করে নেয়া হয়। তাদের প্রত্যেকটি এক একটি স্বতন্ত্র উৎস হিসেবে কাজ করে এরূপ দুটি উৎস সুসংগত উৎস হিসেবে কাজ করে।
দুটি সুসংগত উৎস থেকে নির্গত আলো একটি পর্দায় ফেলা হলে কোথাও উজ্জ্বল আবার কোথাও অন্ধকার অবস্থার সৃষ্টি হয় অর্থাৎ ব্যতিচার সৃষ্টি হয়। সুতরাং স্থায়ী ব্যাতিচার সৃষ্টির শর্ত হচ্ছে,

১. উৎস দুটি থেকে নির্গত আলোক তরঙ্গের কম্পাঙ্ক ও তরঙ্গ দৈর্ঘ্য একই হতে হবে।
২. উৎস থেকে নির্গত আলোক তরঙ্গের বিস্তার সমান বা প্রায় সমান হতে হবে।
৩. উৎস দুটি খুব কাছাকাছি হতে হবে এবং
৪. উৎস দুটি খুব ছোট হতে হবে এক কথায় উৎস দুটিকে সুসংগত হতে হবে।
0
0

Post a Comment

0 Comments
Post a Comment (0)